তৃণমূল নেতা খুনের ঘটনায় বিজেপি র রাজ‍্য স্তরের নেতা সহ ৮ জন ধৃত

28th January 2021 7:50 pm বর্ধমান
তৃণমূল নেতা খুনের ঘটনায় বিজেপি র রাজ‍্য স্তরের নেতা সহ ৮ জন ধৃত


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ও আমিরুল ইসলাম ( বর্ধমান ) :  তৃণমূলের বুথ সভাপতিকে পিটিয়ে খুনের ঘটনায় গ্রেপ্তার হলেন বিজেপির ওবিসি মোর্চার রাজ্য কমিটির সদস্য সহ ৮ জন ।  ধৃতরা হলেন আশীষ ঘোষ ,স্বপন দাস , দোয়েব  মাঝি , লবান মাঝি , রাজা মাঝি , নিখিল ঘোষ ,বাপি দাস ও জগন্নাথ ঘোষ ।বুধবার রাত ভোর অভিযান চালিযে পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোট থানার পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে । ধৃতরা সকলেই মঙ্গলকোটের নিগন এলাকার বাসিন্দা । বৃহস্পতিবার ধৃতদের পেশ করা হয় কাটোয়া মহকুমা আদালতে । তদন্তের প্রয়োজনে পুলিশ ধৃতদের মধ্যে ওবিসি মোর্চার রাজ্য কমিটির সদস্য আশীষ ঘোষ এবং বুথ কমিটির সদস্য স্বপন দাস , রাজা মাঝি ও লবান মাঝিকে নিজেদের হেপাজতে নিতে চেয়ে আদালতে  আবেদন জানায় । বিচারক তাদের  ৫ দিনের পুলিশী   হেপাজত ও বাকি ধৃতদের ১৪ দিনের বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন । ধৃতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছে নিহত তৃণমূলের বুথ সভাপতি সঞ্জিত ঘোষের পরিবার পরিজন ও  মঙ্গলকোটের তৃণমূল নেতৃত্ব । পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে , নিহত  সঞ্জিত ঘোষ (৩৯) ওরফে কালুর বাড়ি মঙ্গলকোট থানার নিগন গ্রামে ।  তিনি নিগন গ্রামের ১৯৭ নম্বর বুথের তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি ছিলেন । অভিযোগ গত মঙ্গলবার দুপুরে এলাকার বিজেপি কর্মীরা  লাঠি ও রড দিয়ে তাকে নির্মম ভাবে পেটায় ।বিশ্বজিত কে মারধোরের ঘটনার প্রতিবাদ করায় ওই বিজেপি কর্মীরা  মঙ্গলকোটের  তৃণমূল সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি ইব্রাহিম খানকেও 
ব্যাপক মারধোর করে । দুই জনকেই উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে । শারীরিক অবস্থা সংকট জনক থাকায় সঞ্জিত কে স্থানান্তরিত করা হয় বর্ধমান  মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে । সেখানে ওইদিন রাতেই সঞ্জিত ঘোষ মারা যায় । নিহত তৃণমূলের বুথ সভাপতির বাবা সাগর ঘোষ  তাঁর ছেলের মৃত্যুর জন্য ২৭ জন বিজেপি নেতা ও কর্মীর নামে বুধবার মঙ্গলকোট থানায়  লিখিত অভিযোগ করেন।দায়ের হওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে খুনের মামলা রুজু করে পুলিশ হন্যে হয়ে অভিযুক্তদের খোঁজ চালানো শুরু করে ।বুধবার রাতভোর অভিযান চালিয়ে  পুলিশ ৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে । বাকি অভিযুক্তদের খোঁজেও পুলিশ তল্লাশী জারি রেখেছে । খুব শিঘ্রি বাকি অভিযুক্তরাও ধরা পড়বে বলে মঙ্গলকোট থানার পুলিশ কর্তারা দাবি করেছেন ।  মঙ্গলকোট ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি অপূর্ব চৌধুরি এদিন বলেন, “ বিজেপি মঙ্গলকোটকে অশান্ত করলো ।  তবুও আমরা বদলার রাজনীতি চাই না। আমরা চাই শান্তি । অপূর্ব বাবু জানান, শুক্রবার অনুব্রত মণ্ডল নিগন গ্রামে আসতে পারেন। তিনি নিহতের বাড়িতে সমবেদনা জানাতে যাবেন। “
নিহত সঞ্জিত ঘোষের  মা নমিতা ঘোষ এদিনও বলেন “,বিজেপির লোকজন  আমার ছেলের  প্রাণ কেড়ে নিল।শাবল দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে ওরা আমার ছেলেকে  মেরেছে।খুনের ঘটনায় জড়িতদের ফাঁসির দাবি করেছেন নিহতের মা । “কাটোয়ার বিজেপি নেতা অনিল দত্ত যদিও এদিনও দাবি করেন ,“খুনের সঙ্গে বিজেপির কোনও যোগ নেই। বিজেপি কর্মীদের ফাঁসানো হল।“
 

 





Others News

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : প্রায় এক বছর আগে আবেদন করেও মেয়ের জাতিগত শংসাপত্র মেলেনি । আবেদনকারীদের জাতি শংসাপত্র দেওয়ার
ক্ষেত্রে দেরি করা যাবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটে চলেছে।প্রায় এক বছর আগে  চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে  আবেদন করেছিলেন মা।কিন্তু মেয়ে কে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসলেও জাতি  শংসাপত্র আজও না মেলায় কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির রাধাকান্তপুর নিবাসী ঊর্মিলা দাস।ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য ঊর্মিলাদেবী বৃহস্পতি বার মেমারি ১ ব্লক বিডিও অফিসে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন। শংসাপত্র পাবার জন্য বিডিও সাহেব কি ব্যবস্থা করেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে ঊর্মিলাদেবী। 

বিডিওকে লিখিত আবেদনে ঊর্মিলাদেবী জানিয়েছেন ,তাঁর স্বামী মানিক দাস দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী ।বছর ১০ বয়সী তাঁদের একমাত্র কন্যা গ্রামের বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত কালে তাঁর ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য তিনি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারী আবেদন করেছিলেন।  উর্মিলাদেবী বলেন ,তার পর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে  গেলেও তিনি তাঁর মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পান না।মেয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে তিনি শংসাপত্রের বিষয়ে মেমারি ১ ব্লকের বিডিও অফিসে খোঁজ নিতে যান।জাতি শংসাপত্র বিষয়ের বায়িত্বে থাকা বিডিও অফিসের আধিকারিক তাঁকে অনলাইনে এই সংক্রান্ত একটি নথি বের করে আনতে বলেন । অনলাইনে সেই নথি বের করেনিয়ে তিনি ফের ওই আধিকারিকের কাছে যান । তা দেখার পর ওই আধিকারিক তাঁকে  ২০ দিন বাদে আসতে বলেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন , তিনি ২৫ দিন বাদে যাবার পর ওই আধিকারিক তাঁকে গোপগন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে খোঁজ নেবার কথা বলেন । তিনি এরপর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যান । নথি ঘেঁটে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে কোন ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি।ঊর্মিলাদেবী দাবী করেন ,এই ভাবে তিনি একবার বিডিও অফিস , আবার পঞ্চায়েত অফিসে দরবার করে চলেন । কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য  গত ১৩ ডিসেম্বর ফের তিনি বিডিও অফিসে যান ।ওই দিনও বিডিও অফিসের জাতি শংসাপত্র বিষয়ক বিভাগের আধিকারিক তাঁকে একই ভাবে পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যেতে বলে দায় সারেন। পরদিন তিনি পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে গেলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ফের জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে  ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি । কেন মেয়ের জাতি শংসাপত্র পাচ্ছেন না সেই বিষয়ে  না পঞ্চায়েত না ব্লক প্রশাসনের কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁকে কিছু জানাতে পারেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন ,পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির আগে তার মেয়ে যাতে ওবিসি শংসাপত্র পেয়ে যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য এদিন তিনি বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন । মেমারী ১ ব্লকের বিডিও আলী মহম্মদ ওলি উল্লাহ এদিন বলেন ,“জাতি শংসাপত্র পাবার জন্য হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ছে । তবে ঊর্মিলাদেবীর কন্যা দ্রুত যাতে বিবিসি শংসাপত্র দ্রুথ পান সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে “। মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য বলেন,’মেমারি  বিধানসভা এলাকার আবেদনকারীরা দ্রুত যাতে জাতি শংসাপত্র পান সেই বিষয়ে প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার কথা বলবো’।